রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার অনুষ্ঠিত হলো সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের আন্তর্জাতিক মহাসম্মেলন। কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা ও খতমে নবুওয়তের পবিত্র আকিদা রক্ষার দাবিকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এ মহাসম্মেলনে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে আলেম-ওলামা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং বিশ্বের নানা দেশের অতিথিরা অংশ নেন।
সম্মেলনে পাঠ করা ঘোষণা পত্রে বলা হয়—
হযরত মুহাম্মদ (সা.)-ই শেষ নবী ও রাসূল, এবং তাঁর পর আর কোনো নবী আসবেন না। এই আকিদা অস্বীকারকারীরা ইসলামের দৃষ্টিতে কাফের। ঘোষণা পত্রে দাবি করা হয়, মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানির নবুয়তের দাবি ইসলামবিরোধী; তাই কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করে তাদের ধর্মীয় পরিচয় স্পষ্টভাবে আলাদা করা উচিত। একই সঙ্গে তাদের মসজিদ ব্যবহারে, ইসলামী পরিচয়ে নাম প্রকাশে এবং মুসলমানদের সঙ্গে বিবাহ-শাদিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানানো হয়।
খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের আমীর মুফতি ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেন—
“মুসলমানদের মৌলিক দাবি সংবিধানে প্রতিফলিত না হলে সেই সংবিধান মান্য করা যায় না। কাদিয়ানিদের বিষয়ে সরকার সেক্যুলারিজমের অজুহাতে নীরব ভূমিকা পালন করছে।”
তিনি আরও বলেন, খতমে নবুওয়তের বিশ্বাস ছাড়া মুসলিম পরিচয় আদৌ পূর্ণ হয় না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল কাইয়ূম বলেন—
“বর্তমান সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার নয়। তারা যেন দ্রুত কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করে আইন পাস করে।”
হেফাজতে ইসলামের আমীর মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর লিখিত বক্তব্যে বলা হয়—
“বিশ্বের ১০৪টি রাষ্ট্র কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করেছে। এ দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।”
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেন—
“জামায়াত ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে মুসলিম বিশ্বে কোনো দ্বিমত নেই।”
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক বলেন—
“যারা নবুয়তের দাবি করে তারা ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে ঘৃণিত চরিত্র। কাদিয়ানিদেরকে অবিলম্বে কাফের ঘোষণা করতে হবে।”
সম্মেলনে বিদেশি অতিথিদের মধ্যে পাকিস্তান, ভারত, মিশরসহ বিভিন্ন দেশের শীর্ষ আলেমরা গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।