চট্টগ্রাম অফিস:
পেরিয়ে গেছে ২৭টি বছর! সময়ের এই আবর্তনে আর জীবিকার প্রয়োজনে কে কোথায় ডুব মেরেছিলো-জানা ছিলোনা সকলের। কিন্তু স্কুল জীবনের আনন্দঘন আর বৈচিত্রময় জীবনের স্মৃতিগুলো কি আর মরে গেছে! তাই তো একে অন্যের সাথে মিলিত হওয়ার আকূতি জ্বলজ্বল করছিলো অন্তরে। সেই অন্তরের টানেই কুঁকড়ে থাকা জীবনের গন্ডি উপেক্ষা করে সহপাঠীরা মিলেছিলো একই মোহনায়।
আমরা নোফেল’৯৩ এর প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী চট্টগ্রামে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার। এ উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামের নোফেল’৯৩ বন্ধুরা সেদিন সন্ধ্যায় মিলিত হয়েছিলো নগরীর দেওয়ানহাট মোড়ের আলিফ রেস্টুরেন্টের দ্বিতীয় তলার হলরুমে। বন্ধুত্বের উষ্ণতায় শীতের মৌসুমে এসি রুমেও তাই হিম ছড়াতে পারেনি প্রকৃতি। বয়সের পিছুটান, চেনা-জানার ব্যবধান, এলাকার গন্ডি, নারী-পুরুষের আবর্তন-সবকিছু ভেসে গেছে ‘তারুণ্যের নব জোয়ারে’।
অংশগ্রহণকারী নোফেল বন্ধুদের কেউ নিজ হাতে বানিয়ে এনেছে পাটিসাপটা পিঠা, কেউবা বন্ধুদের খুশি উপহার দিতে স্ত্রীকে দিয়ে তৈরি করে এনেছিলো ছাইন্না আর সুজির পিঠা। স্বাস্থ্যবিধি মাথায় রেখে মাস্ক বিতরণ, কেক কাটা, ফুল বিনিময়, ফটোসেশন, সেলফি, ব্যতিক্রমী নৈশভোজ, সমস্বরে গান, উদ্দামতায় উদযাপিত হয়েছে প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। যদিও করোনা ভাইরাস সংক্রমণে সতর্কতা আর সরকারি নির্দেশনার কারণে প্রতিষ্ঠাবার্ষিবীতে জনসমাগম সীমিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। তবে আগামীতে এই আয়োজন আরও বৃহৎ পরিসরে করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তাঁরা।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অনেকের সাথে এর আগে আরেকজনের কখনো দেখা না হলেও কেবল ৯৩ এর আকর্ষণে সবাই ভুলে গিয়েছিলো পরিচিতির ব্যাপ্তি। প্রত্যেকের হৃদ্যতায় অচেনার গন্ডি পরিণত হয়েছিলো চির-চেনার আলিঙ্গনে। ব্যবসায়ী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, বেসরকারী চাকুরিজীবি, পুলিশ কর্মকর্তা, গৃহিনী সকল জীবিকার মানুষগুলো একই সুরে বাঁধা পড়েছিলো সেদিন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মৃত্যুবরণকারী এসএসসি’৯৩ সহপাঠীদের জন্য এবং পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য বিশেষ দোয়ার আয়োজন ছিলো আবেগপূর্ণ। আমরা নোফেল ৯৩ বন্ধুরা পারস্পরিক যোগাযোগ আরও ঘনিষ্ঠ করে সুখে-দুঃখে একসাথে থাকার প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা। সকলের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে ‘জয় হোক বন্ধুত্বের’।