বার্তা বিভাগ :
করোনার কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়া ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন আগামী ৯ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে রোববার অনলাইনে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, এবার একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে কেবল অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে। এসএমএসে আবেদন করা যাবেনা। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অনলাইনে কমপক্ষে ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে পারবে। এসএসসি ও সমমানের পরিক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি কাজ চলবে। কোনো পরিক্ষা হবে না।
এবারও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় এই ভর্তির কাজ হবে। ২০ জুলাই সোমবার ভর্তির আবেদন সংক্রান্ত নোটিশ দেওয়া হবে।
এদিকে বর্তমানে যারা উচ্চমাধ্যমিকে পড়ছে তাদের একাদশ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠানোর সিদ্ধান্ত কলেজগুলোই নেবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, একাদশ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার বিষয়টি কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
জাানা গেছে, একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে এবার ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার কোটা ছাড়া অন্য কোটা থাকবে না। তবে প্রতিবন্ধী, বিকেএসপির শিক্ষার্থী, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে জাতীয় পর্যায়ে অসামান্য সাফল্যের অধিকারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ জন্য তাদের ম্যানুয়ালি পদ্ধতিতে আবেদন করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ মে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশিত হয়। এতে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন পরীক্ষার্থী। যারা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অপেক্ষা করছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, সারা দেশে ভর্তির জন্য আসন আছে প্রায় ২৩ লাখ। ফলে উচ্চমাধ্যমিক মোট আসন নিয়ে সমস্যা হবে না। তবে ভালো কলেজগুলোতে আসন কম খাবায় সেখানেই হবে তীব্র প্রতিযোগিতা।
এসএসসি পরীক্ষার শেষ পর্যায়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিসংক্রান্ত কাজগুলো ঠিক করে রেখেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বোর্ড। তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল গত মে মাসের শুরুর দিকে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করে ১০ মে থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন নেওয়া শুরু হবে। সেই অনুযায়ী ১ জুলাই থেকে ক্লাস শুরুর কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পুরো শিক্ষাপঞ্জিই ওলটপালট হয়ে গেছে।
তবে ভর্তির কাজটি অনলাইনে হলেও কবে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। এখনো সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী ৬ আগস্ট পযন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগস্টে আর খোলার সম্ভাবনা নেই।
এদিকে করোনায় বন্ধ না হলে এখন যারা একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে তাদের দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার বর্ষ পরীক্ষা নিতে পারেনি অধিকাংশ কলেজ। বিচ্ছিন্নভাবে দু-একটি কলেজ গত মার্চে এই পরীক্ষা শুরু করা বা শেষ করলেও বেশির ভাগ কলেজেই তা পারেনি। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠানো যায়নি। যদিও কোনো কোনো কলেজ পরিক্ষা ছাড়াই দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বেশির ভাগ কলেজই আনুষ্ঠানিকভাবে পদোন্নতি না দিলেও ওই সব শিক্ষার্থীদের এখন দ্বাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে। কলেজের এক শিক্ষক জানান, গত মার্চে তাদের কলেজে বর্ষ পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু শেষ করা যায়নি। এখনো কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা না হলেও ওই সব শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে দ্বাদশ শ্রেণির।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ক্লাশ উন্নীতির ব্যাপারে বোর্ডের কোনো হস্তক্ষেপ থাকে না। কাজেই এটি কলেজগুলো তাদের নিয়মেই করবে। কীভাবে করবে এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।