এমরানুল ইসলাম মুকুল :
চট্টগ্রাম নগরীতে এখনো নিয়ন্ত্রণে আসছেনা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। জেলায় আক্রান্তদের প্রতি একশ জনে প্রায় ৭২ জনই মহানগরীর বাসিন্দা। মৃতের সংখ্যাও এখানে উপজেলার চেয়ে অনেক বেশি। এরপরও নগরবাসির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেয়া প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এ চিত্র ফুটে উঠেছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে তাঁর এক ভিডিও প্রতিবেদনে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে মোট ৯৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৩ জনের দেহে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। আর আক্রান্ত এই ৫৩ জনের মধ্যে ৪২ জনই নগরীর বাসিন্দা। যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে করোনায় কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি, তবে এ পর্যন্ত মোট ২৭৭ জন করোনাক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যেও শুধু নগরীতেই রয়েছেন ১৯২ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, চট্টগ্রাম জেলায় এ পর্যন্ত মোট ৮৮,৭৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ হয়েছেন ১৭,৭৫০ জন। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর বাসিন্দা আছেন ১২,৬৭৩ জন। যা জেলায় মোট আক্রান্তের ৭১ শতাংশেরও বেশি।
তথ্য মতে, চট্টগ্রামে মোট নমুনা পরীক্ষার তুলনায় আক্রান্তের হার প্রায় ২০ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১ জন সহ মোট সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৭৬২ জন। আক্রান্তের তুলনায় সুস্থতার হার ৭৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি জানান, বর্তমানে হাসপাতালে আইসোলেশনে আছেন ১২৭ জন। এরমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮৩ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৯ জন, বিআইটিআইডি’তে ৯ জন, রেলওয়ে হাসপাতালে ২ জন এবং হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে রয়েছেন ৪ জন করোনা রোগি। এছাড়া হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৩৯ জন।
প্রতিবেদন প্রদানকালে জেলা সিভিল সার্জন করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে প্রত্যেককে মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আহ্বান জানালেও বাস্তব চিত্র তার বিপরীত। নগরবাসির মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা ক্রমশ হ্রাস পেতে দেখা গেছে। হাট-বাজার, অফিস, বাসস্থান সব জায়গাতেই লোকজনকে এব্যাপারে উদাসিন দেখা গেছে। মাস্ক ব্যবহারকারীর সংখ্যাও দিন দিন কমছে। আর এসকল স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা নেই বললেই চলে। এতে করে চট্টগ্রাম নগরীতে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছেনা। আর নগরীতে সংক্রমণ না থামলে তা উপজেলা পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।