চট্টগ্রাম অফিস :
জোয়ারের পানিতে ভাসলো দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই ও আসাদগঞ্জের আড়ত, গুদাম ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়াও জোয়ারে ডুবেছে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, সিডিএ আবাসিক, মা ও শিশু হাসপাতাল এলাকা, শান্তিবাগ, হালিশহর, ছোটপুল, বড়পুল, মুহুরী পাড়া, বেপারী পাড়া, বাকলিয়া, চান্দগাঁওসহ নিম্নাঞ্চল। হাটহাজারীর মদুনাঘাটসহ হালদা ও কর্ণফুলীর দুই পাড়ের অনেক নিচু এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। এদিকে আজও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
জানা গেছে, অমাবস্যা-পূর্ণিমা সংক্রান্ত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে দেশের বৃহত্তম পাইকারী বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জসহ চট্টগ্রাম নগরের অনেক নি¤œাঞ্চল। তবে জোয়ার দিনে হওয়ায় এবং ব্যবসায়ীরা আগে থেকে সতর্ক থাকায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কম হয়েছে। অনেকে তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র সরাতে সক্ষম হয়েছে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ীরা জানান, দিনের বেলা জোয়ার আসায় আড়তদার, কর্মকর্তা, কর্মচারী, শ্রমিকরা পণ্যসামগ্রী সরাতে পেরেছে। রাতের বেলা জোয়ার নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।
আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বলেন, বুধবার (১৯ আগস্ট) জোয়ারের পানি কম উঠেছিল। তবে বৃহস্পতিবার জোয়ারের পানিতে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদী ও খালের পানি ধারণক্ষমতা কমে গেছে ভরাট হওয়ায়। বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ইতিমধ্যে অনেক ব্যাবসায়ী চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ থেকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নিচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে চাকতাই-খাতুনগঞ্জে একদিন কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকবে না।
এদিকে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের মতো অবস্থা হয়েছে শুঁটকির বড় পাইকারি বাজার আসাদগঞ্জে। অনেক আড়তে জোয়ারের পানি ঢুকে গেছে। সড়কে ছিল হাঁটুপানি।
অপরদিকে জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে হোটেল আগ্রাবাদ এলাকা, মোল্লাপাড়া, মুহুরী পাড়া, রঙ্গিপাড়া, বেপারী পাড়া, ছোটপুল, বড় পুল, হালিশহর ‘এল’ ব্লক, ‘কে’ ব্লক, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল এলাকা, সিডিএ আবাসিকসহ বড় একটি এলাকার মানুষ কষ্ট পাচ্ছেন। নিচতলার অনেক বাসাতে বসবাসের মতো পরিস্থিতি নেই।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৭ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। প্রথম জোয়ার শুরু হয়েছিলো সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে, ভাটা শুরু হয় বেলা ২টা ১২ মিনিটে। রাত ৯টা ২১ মিনিটে আবার জোয়ার শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সহকারী আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা উজ্জ্বল কান্তি পাল জানান, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে ভারতের বিহার-পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে আজ শুক্রবার ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।