চট্টগ্রাম অফিস :
প্রয়োজনীয় টাকার অভাবে দুরারোগ্য ক্যান্সারের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেননা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩১ নং আলকরণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেক সোলেমান সেলিম। এব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে খোলা চিঠি লিখেছেন।
নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বর্ণনা দিয়ে তারেক সোলেমান সেলিম চিঠিতে লিখেছেন, ‘প্রাণপ্রিয় নেত্রী আপনি মাদার অব হিউম্যানিটি। আপনার মমতাময়ী মনের রূপ আজ সারা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। ’
‘বর্তমানে আমার এই কষ্টদায়ক পরিস্থিতিতে আপনার মমতাময়ী হাত সদয়ভাবে বাড়িয়ে দেবেন এটা আশা করতে পারি। আমার চিকিৎসা চালিয়ে নিতে আপনার সদয় আর্থিক সহযোগিতায় আমাকে বাধিত করবেন। ’
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রথম কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তারেক সোলেমান সেলিম। এরপর ২০০০, ২০০৪ এবং সর্বশেষ ২০১৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
তারেক সোলেমান সেলিম বর্তমানে ঢাকার ডেল্টা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দ্রুত তাকে সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ডে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন হাসপাতালটির চিকিৎসকরা।
চট্টগ্রাম নগরীর আলকরণ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ছালেহ্’র ছেলে তারেক সোলেমান সেলিম স্কুল জীবনেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর কিশোর বয়সেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবি করে রাজপথে মিছিল করেন তারেক সোলেমান সেলিম।
পরে আলকরণ ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে ৭৫ পরবর্তী সময়ে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়া এই এলাকার ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করেন তিনি।
১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগের মিছিলে হামলা করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ নেতা এমএ ওয়াহাব, এমএ মান্নান এবং ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনকে অপহরণ করে আটকে রাখে।
সেদিন তারেক সোলেমান সেলিমসহ ২৫ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী পাল্টা হামলা করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হাত থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্ধার করেন।
২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারেক সোলেমান সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। কয়েকবার হামলার শিকারও হন তিনি।
২০০৪ সালে ২১ আগস্টের নির্মম ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে আন্দোলন করতে গিয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেন, আওয়ামী পরিবারের সন্তান, সারাজীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা তারেক সোলেমান সেলিম টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না।
অথচ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি না করেও দলের পদ-পদবী দখল করে, প্রভাব খাটিয়ে অনেকে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন। দলের এই সুসময়ে তারেক সোলেমান সেলিমের মতো দুসময়ের কর্মীরা যাতে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ না করেন।
সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. জামাল হোসেন জানান, চারবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেও টাকার দিকে নজর দেননি তারেক সোলেমান সেলিম। জনগণের পাশে ছিলেন। দলের পাশে ছিলেন। তারেক সোলেমান সেলিম টাকার অভাবে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাবেন এটি হতে পারে না। আমাদের নেত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছে আবেদন- টাকার অভাবে চিকিৎসা না পেয়ে তারেক সোলেমান সেলিমরা যাতে হারিয়ে না যায়।