আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
নানান উদ্যোগ, সেলিব্রেটিদের দলে ভেঁড়ানোর পরও মোদীর বিজেপি থেকে মমতার তৃণমূলের পাল্লা ভারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। ভোট শুরুর দুই সপ্তাহ আগে গত সোমবার প্রকাশিত জনমত জরিপের চিত্র তাই বলছে। ভোট যত এগোচ্ছে, তৃণমূলের সরকার গড়ার সম্ভাবনা তত বাড়ছে।
সোমবার রাতে এবিপি আনন্দ ও সিএনএক্সের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, তৃণমূল কংগ্রেস তার অবস্থান আরও মজবুত করেছে। পাশাপাশি বিজেপি পিছু হটেছে আরও খানিকটা। ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে রাজ্যের মোট ২৯৪ আসনের মধ্যে বাছাই করা ১১৭টি কেন্দ্রের এই জরিপে বলা হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস পাবে ১৫৪ থেকে ১৬৪ আসন। বিজেপি পেতে পারে ১০২ থেকে ১১২। কংগ্রেস-বাম জোট পেতে পারে ২২ থেকে ৩০ আসন।
এবিপি আনন্দ-সিএনএক্সের এটি দ্বিতীয় জরিপ। এক মাস আগের প্রথম জরিপের ইঙ্গিতেও তৃণমূল এগিয়ে ছিল বিজেপি থেকে। তবে আসনসংখ্যা ছিল এবারের তুলনায় কম। ১৪৬ থেকে ১৫৬। বিজেপির ছিল ১১৩ থেকে ১২১। বাম-কংগ্রেস ২০-২৮।
নির্বাচনের বাকি এখনো দুই সপ্তাহ। প্রচার ক্রমে বাড়ছে। আজ বুধবার তৃণমূলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মনোনয়নপত্র পেশ করবেন। দলত্যাগী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর গড়ে গিয়ে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে গত রোববার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বিপুল জনসভা করে ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, অথচ জনমত জরিপে এগিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল! এর একটা সম্ভাব্য কারণ, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিজেপির কাউকে তুলে না ধরা। অন্য কারণ, বিজেপির ভূমিপুত্রদের মধ্যে সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রীদের তুলনায় মমতার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।
জরিপ অনুযায়ী, মমতাকে যেখানে ৪৩ শতাংশের পছন্দ, দিলীপ ঘোষকে সেখানে পছন্দ করছেন মাত্র ২৪ শতাংশ। দ্বিতীয় কারণ, কৃষক আন্দোলনের প্রভাব। ৪৯ শতাংশ লোক মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গের ভোটে কৃষক আন্দোলনের প্রভাব পড়বে। তৃতীয়ত, দুর্নীতির প্রশ্নে বিজেপির তুলনায় তৃণমূল পিছিয়ে থাকলেও তৃণমূল ভাঙিয়ে বিজেপির দল ভারী করা, লোকজন ভালোভাবে নিচ্ছেন না। চতুর্থত, সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে বিজেপির তুলনায় তৃণমূলের অবস্থান অনেক ভালো।
লক্ষ্যণীয়, এক মাসের ব্যবধানে করা দুই জরিপে তৃণমূলের ভোটের হার একই আছে, ৪২ শতাংশ। কিন্তু বিজেপির ভোট শতাংশ ৩৭ থেকে কমে ৩৪ হচ্ছে। এই ৩ শতাংশ ভোট যাচ্ছে বাম-কংগ্রেস জোটে। ২০১৯’র লোকসভা ভোটে বাম-কংগ্রেসের যে সমর্থন বিজেপিতে গিয়েছিল, এবার জোটের কারণে তা ফিরে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
একই সময়ে পাঁচ রাজ্যের ভোট জরিপ করেছে টাইমস নাউ-সি ভোটার। তাদের জরিপেও তৃণমূল এগিয়ে ১৫৪ আসনে, বিজেপি ১০৭টিতে। এই জরিপ অনুযায়ী, আসামে আসন কমলেও বিজেপি জোট ক্ষমতা ধরে রাখবে। মোট ১২৬ আসনের মধ্যে বিজেপি জোট পেতে পারে ৬৭টি, যা আগেরবারের তুলনায় ২০টি কম। কংগ্রেস-এআইইউডিএফ-বিপিএফ জোট পেতে পারে ৫৭ আসন।
তামিলনাড়ুর ২৩৪ আসনের মধ্যে ডিএমকে-কংগ্রেস জোট ১৫৯, এআইএডিএমকে-বিজেপি জোট ৬৫টি আসন জিততে পারে। চিরায়ত প্রথা ভেঙে এবার কেরালায় দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসতে চলেছে বাম জোট। রাজ্যের ১৪০ আসনে বাম জোট ৮২, কংগ্রেস জোট ৫৬, বিজেপি ১টি আসন পেতে পারে। এই প্রথম পদুচেরিতে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা বিজেপি জোটের। ৩০ আসনবিশিষ্ট এই রাজ্যের বিধানসভায় এনডিএ জোট পেতে পারে ১৮টি, কংগ্রেস-ডিএমকে ১২।