1. [email protected] : Administrator :
  2. [email protected] : mukulislam :
  3. [email protected] : newsman :
  4. [email protected] : Osman Goni : Osman Goni
  5. [email protected] : Yousuf :
আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম! - SHAPLA TELEVISION
August 11, 2025, 4:44 am

আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
  • 86 Time View

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পরানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনার এক মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সেই সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি তুলেছেন দেশের সচেতন নাগরিকরা।
হেনস্থার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে অবমাননার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা বীর মক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি একটি হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও ৮টি মামলা রয়েছে।। তার ছেলে মানুষকে অত্যাচার করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
হেনস্থার শিকার ওই মুক্তিযোদ্ধা আ’লীগের মন্ত্রী মুজিবুল অনুসারীদের হাতে সপরিবারে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। এমনকি তার বিরুদ্ধে নয়টি মামলাও করা হয়। তাতে কারাগারেও যেতে হয় তাকে। স্বয়ং তিনি জানিয়েছেন, নিজে আ’লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও নিজ দলের নেতাকর্মীদের অত্যাচারে ৮ বছর এলাকা ছাড়া ছিলেন তিনি।
কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে ওই মুক্তিযোদ্ধা নিজ দলের নেতাকর্মীদের হাতে অত্যাচারিত হলেও দেশের কোনো গণমাধ্যম তখন প্রতিবাদে সোচ্চার হয়নি। এখন বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় ফেলে দেওয়ায় গণমাধ্যমের অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে কিনা তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।
সমালোচকরা বলছেন, খুনি হাসিনার আমলে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা চরম নিপীড়ন ও নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে। তখন তো এই মিডিয়াগুলোকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে সংবাদের শিরোনাম করতে দেখিনি? তাহলে এখন কেন করা হচ্ছে?
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু বলেন, আমার সঙ্গে যে বর্বর ঘটনা ঘটেছে। ২০১৬ সালে আমার ছেলে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব বাতিসা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে। সেখানে সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের সায় ছিল না। তিনি নানাভাবে আমাদের পরিবারকে হয়রানি করেন। আমার বিরুদ্ধে নয়টি মামলা করা হয়। কারাগারেও যেতে হয়। কারাগারে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের সঙ্গেও কয়েকদিন ছিলাম।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আমি গ্রামের বাড়িতে আসি। এর আগে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী মুজিবুল হকের রোষানলে পড়ে এলাকা ছাড়া ছিলাম। ভেবেছিলাম এবার স্বস্তিতে গ্রামে থাকতে পারব। কিন্তু ওরা পাকিস্তানি হায়েনার চেয়েও হিংস্র আচরণ করেছে আমার সঙ্গে।
রোববার দুপুরের দিকে স্থানীয় ১০/১২ জন সেখানকার কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তাকে পেয়ে ঘিরে ধরে ও হেনস্থা করে। এই হেনস্থার প্রায় পৌনে দুই মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে রোববার রাত থেকেই। ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছনার এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
আবার কেউ কেউ ফেসবুকে লাঞ্চনার পক্ষেও মন্তব্য করেছেন। আবার কেউ লিখেছেন, ‘তিনি বেআইনি কিছু করলে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ না নিয়ে কথিত মব জাস্টিস কেন?’
এই ইস্যুতে আওয়ামী দোসর মিডিয়ার আস্ফালনে ক্ষোভ জানিয়ে নেটিজেনরা বলছেন, আশ্চর্য যে বেশিরভাগ গণমাধ্যমই উনাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসবে পরিচয় করাচ্ছেন। কিন্তু উনি স্বৈরাচারের দোসর অনেক অপরাধের সাথেই জড়িত ৯টা খুনের আসামি। উনি যেমন মুক্তিযোদ্ধা, তেমন উনি ভয়ংকর অপরাধীও। মুক্তিযোদ্ধা বলছেন ভালো কথা। অপরাধী বলছেন না কেন? সে খুনের হুকুমদাতা, তার নির্দেশে ৩টা খুন হয়েছে, অসংখ্য মানুষ ১৫ বছর এলাকায় থাকতে পারেনি।
এখন একজন খুনি মুক্তিযোদ্ধা হলে কি তার ৭ খুন মাপ হয়ে যাবে?
ফেসবুকে জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি নাগরিকের আইন হাতে তুলে নেয়ার চরম বিরোধী, মব জাস্টিসের বিরোধী। তিনি মুক্তিযোদ্ধা, রাজাকার বা কোন সাধারণ নাগরিক যিনি হোন না কেন তার কোন অন্যায় থাকলে আইন অনুযায়ী তার বিচারের পক্ষে কঠোরভাবে আমার অবস্থান। সেই বিচারে আমি এই ভদ্রলোকের গলায় জুতার মালা পরিয়ে অসম্মান করার চরম বিরোধী।
এখন প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশের গণমাধ্যমে রিপোর্ট এসেছে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে জুতার মালা পরানো হলো- এটা মহা অন্যায়। এ ধরনের রিপোর্টে মনে হতে পারে, তিনি মুক্তিযোদ্ধা না হলে তাকে জুতার মালা পরানো বোধ হয় কোন অন্যায় হতো না। এটাও কি একটা অন্যায় বিচার নয়?
দ্বিতীয়তঃ মুক্তিযোদ্ধার বাইরে এই লোকটির কী আরো কোন পরিচয় ছিল? তার কি কোন রাজনৈতিক পরিচয় ছিল? তিনি কি কোন অপরাধ সংক্রান্ত ঘটনাবলীর সাথে জড়িত ছিলেন? যেমন খুন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস দখলবাজি প্রভৃতি? যদি থাকে তাহলে সেই সব পরিচয় বাদ দিয়ে কেবল মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় কেন শিরোনামে পিক করা হলো? যদি থাকে সেইসব পরিচয়ের কোন একটি বিশেষণ নিয়েও তো কোন না কোন গণমাধ্যমে শিরোনাম হতে পারত? কেন সেগুলো করা হলো না? কেন মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়টি শিরোনামে আনা হলো? আমি এটা বলছি না যে,সেসব পরিচয় দিয়ে শিরোনাম করলে এই ঘটনা জায়েজ হতো, বা আমি সমর্থন করতাম। আমি বলতে চাইছি, মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ের প্রতি দেশের মানুষের সম্মান ও আবেগের মোড়কে এই লোকটিকে কি কোন প্রিভিলেজ দেয়ার চেষ্টা ছিল গণমাধ্যমগুলোতে? যদি মব জাস্টিস বা গলায় জুতার মালা পরানোর বিষয় নিয়ে শিরোনাম হত তাহলে এই লেখার প্রয়োজন হতো না। এটা অনেকটা বাংলাদেশের ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ সংক্রান্ত সংবাদের ট্রিটমেন্ট স্টাইল! এমনকি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালায়ও এতে প্রভাবিত হয়েছে সেটা তাদের বিবৃতিতে বোঝা যায়। তবে এই ঘটনায় যদি বিএনপির সংশ্লিষ্টতা থাকতো তাহলে হয়তো সাইবার পৃথিবীতে ভূমিকম্প হত।
প্রশ্ন হল, মুক্তিযোদ্ধা হলে কী কোন ব্যক্তির অপরাধের বিচার করা যাবে না? বর্তমানে বিগত সরকারের মন্ত্রী এমপি ও নেতৃবৃন্দের অনেকেই যারা জেলে রয়েছেন তাদের অনেকেই বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত। তাদেরকেও কী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের অপকর্মের জন্য বিশেষ ছাড় দেয়া হবে? তাদের বেলাতে কী এ ধরনের শিরোনাম করা হবে? এরা কী একদিন শিরোনাম করবে- বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন আমু, শাজাহান খানকে …
হাসিনা রেজিমে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা চরম নিপীড়ন ও নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে। তখন তো এই মিডিয়াগুলোকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে সংবাদের শিরোনাম করতে দেখিনি? সেক্টর কমান্ডার, জেড ফোর্স এর কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পরিবারের প্রতি যখন চরম নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করা হয়েছিল, তখন তো এমন কোন শিরোনাম দেখিনি! মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় যদি সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি পায় তবে মুজিব হত্যাকাণ্ডে তাদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে তাদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন- এ কথা মনে করিয়ে দেয়া কি দোষ হবে?
অন্যদিকে, এ্যাড. মোঃ মানিক হোসেন লিখেছেন, হে বীর মুক্তিযোদ্ধা, আমাদের ক্ষমা করে দিয়েন।তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি করছি।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন লাঞ্ছনার শিকার মুক্তিযোদ্ধার সাথে তার কথা হয়েছে। ওনার বিরুদ্ধে কারও কোন অভিযোগ থাকলে সেটা নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ ছিলো। তা না করে যেটি করা হয়েছে সেটি যে কোন মানুষের জন্যই অসম্মানজনক। আরও মুক্তিযোদ্ধারা এসেছেন। আমরা কথা বলেছি। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020
Theme Customized By LiveTV