গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতনের পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি কালো পর্দা দিয়ে আবৃত রয়েছে। ম্যুরালটিকে ২৪’র ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্মৃতিফলকে সংস্কারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম জানান, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। শিক্ষার্থীদের সবার দাবির প্রেক্ষিতে আমরা ম্যুরালটি সংস্কার করে ২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্মৃতিফলক তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এটা নিয়ে আমরা শীঘ্রই কাজ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শেখ সিফাত ইসলাম জানান, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনালগ্নে থেকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি থেকে দূরে রাখলেও রাজনৈতিক সচেতনতার পরিচয় তারা সব সময়ই দিয়েছে। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে নির্মিত মুজিব ম্যুরাল পরিবর্তন করে ২০২৪’র আন্দোলনের স্মৃতিফলক স্থাপনের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে, তা একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমি অবশ্যই সাধুবাদ জানাই। ২৪ এর আন্দোলনের স্মৃতিফলকের পাশাপাশি বাংলাদেশের ইতিহাসের সকল ছাত্র আন্দোলন ৫২, ৬২, ৬৯, ৭১, ৯০ সাল – এর ইতিহাসের উল্লেখ থাকলে ভালো হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুন্না হোসেন বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে কেনো ফ্যাসিস্টের ম্যুরাল থাকবে না। হাসিনার পতনের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জায়গায় মুজিবের ম্যুরাল গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, আমরা মব জাস্টিসের প্রশ্রয় দিই না।
তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আস্থা রেখেছি, তারা দ্রুতই এটা সংস্কার করবেন। এ ধরনের উদ্যোগ আমাদের আন্দোলনের গুরুত্ব এবং গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের দায়িত্বের প্রতি সচেতনতা বাড়াবে।’
ম্যুরালের নির্মাণ ব্যয় জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ইঞ্জিনিয়ার সেকশন প্রধান জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের গত প্রশাসনের সময়কার কোনো নথি আমাদের কাছে নেই। ওগুলো সব উপাচার্যের দফতরে জমা রয়েছে।’
তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে বড় অংশ মনে করেন, তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ম্যুরালটি স্থাপনার মাধ্যমে ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পরিবর্তে রাজনৈতিক স্বার্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন।