বার্তা বিভাগ :
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের একবছর পূর্ণ হলো আজ ৮ মার্চ। এই একবছর পূর্ণ হওয়া কোনো আনন্দের বর্ষপূর্তি নয়। বরং আতঙ্ক, মৃত্যু, হতাশা, কর্মহীনতা, সমাজিক দূরত্ব তৈরিসহ নানান নেতিবাচক অবস্থার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেছেন সাধারণ মানুষ।
২০১৯ সালের শেষের দিকে চীনের উহানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। আর বাংলাদেশে সংক্রমিত হতে শুরু করেছিলো ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে। গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম তিনজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে দুজন বিদেশফেরত, অন্যজন দেশে থাকা তাদের পরিবারের সদস্য।
প্রথম শনাক্তের ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রথম মৃত্যু ঘটে রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগে। এরপর থেকেই প্রতিদিন শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে।
গত বছরের ২ জুলাই দেশে সর্বোচ্চ একদিনে ৪০১৯ জন করোনা আক্রান্ত হন। আর সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ৩০ জুন। সেদিন সর্বাধিক ৬৪ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে একমাত্র আইইডিসিআর ছাড়া করোনা পরীক্ষার জন্য আর কোথাও আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরি ছিল না। বর্তমানে দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২১৯টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হচ্ছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১১৮টি, জিন-এক্সপার্ট ২৯টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ৭২টি। গত এক বছরে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪১ লাখ ৩২ হাজার ২১৩টি।
গত বছরের ৮ মার্চ থেকে গতকাল ৭ মার্চ পর্যন্ত দেশে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৮ হাজার ৪৬২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৩ হাজার ৩ জন। এখন করোনা পজিটিভ রোগী আছেন ৪৭ হাজার ৩২৭ জন। মৃতদের মধ্যে ৬ হাজার ৩৯৭ জন পুরুষ (৭৫ দশমকি ৬০ শতাংশ) এবং ২ হাজার ৬৫ জন নারী (২৪ দশমিক ৪০ শতাংশ)। সর্বোচ্চ ৮০ দশমিক ৪৩ শতাংশই অর্থাৎ ৬ হাজার ৮০৬ জন ছিল ৫০ বছরের বেশি বয়সের মানুষ। তাঁদের বেশির ভাগই আগে থেকে নানা ঝুঁকিপূর্ণ রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে এখনো প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। গতকাল ৭ মার্চ সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৪ হাজার ৫৪টি। পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৯২ জনের। নতুন শনাক্ত হয়েছে ৬০৫ জন এবং সুস্থ হয়েছে এক হাজার ৩৭ জন। আর মারা গেছেন ১১ জন।
সর্বশেষ গড় অনুসারে দৈনিক শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ, মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৪০ শতাংশ, মৃত্যুহার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
অধিদপ্তরের সূত্র মতে, দেশে এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৩০ হাজার ৯৮৫ জন। ছাড়পত্র নিয়েছেন ৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৮৫ জন। পাশাপাশি এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন ১ লাখ ৯০৫ জন। আর ছাড়পত্র নিয়েছেন ৯১ হাজার ১৯১ জন। বর্তমানে আছেন ৯ হাজার ৭১৪ জন।