আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাক পিসি’র মতো প্রোডাক্ট যাদের রয়েছে তাঁরাতো চাইলেই বানাতে পারে নিজেদের একটি সার্চ ইঞ্জিন। হ্যাঁ, বলছি অ্যাপলের কথাই। তবে সার্চ ইঞ্জিন তৈরির কোনো ইচ্ছা বা পরিকল্পনা নেই অ্যাপলের। সম্প্রতি (২৩ ডিসেম্বর) আমেরিকার ফেডারেল আদালতে এমনটাই জানিয়েছেন অ্যাপল সার্ভিসেস-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এডি কিউ। পাশাপাশি সার্চ ইঞ্জিন তৈরি না করার কারণগুলোও তিনি বিস্তারিত জানিয়েছেন আদালতকে।
গত ২৩ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি’র ফেডারেল আদালতে এডি কিউ অ্যাপলের তরফ থেকে একটি ডিক্লারেশন জমা দেন এবং সেখান তিনি জানান কেন অ্যাপল সার্চ ইঞ্জিন তৈরির পরিকল্পনা করছে না। চলুন কারণগুলো সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক:
১। নিজস্ব একটি সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করা বেশ ব্যয়বহুল একটি প্রোজেক্ট হবে বলেই মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি।
২। এআই প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহারে সার্চ ইঞ্জিন বিজনে আগের চেয়ে অনেক বেশি অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।
৩। অ্যাপল ‘টার্গেটেড অ্যাডভারটাইজিং’ বিক্রি করে উপার্জন করতে ইচ্ছুক নয়। কেননা এটি তাঁদের প্রাইভেসি পলিসি বা গোপনীয়তা নীতির সাথে সাংঘর্ষিক হবে।
৪। সার্চ ইঞ্জিন তৈরির জন্য যথেষ্ট অবকাঠামো বা মানবসম্পদ অ্যাপলের নেই।
এবারে চলুন ঘটনার প্রেক্ষাপট জেনে নেওয়া যাক। চলতি বছরের শুরুতেই গুগলের বিরুদ্ধে আমেরিকার আইন বিভাগ আদালতে অভিযোগ আনে যে, তাঁরা সার্চ ইঞ্জিনের বাজারে আমেরিকায় প্রচলিত অ্যান্টিট্রাস্ট আইন ভঙ্গ করেছে। অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিনের বাজারে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য (প্রায় ৯০ শতাংশ শেয়ার) ধরে রাখতে যে পন্থা অবলম্বন করেছে সেটা অ্যান্টিট্রাস্ট আইনের পরিপন্থী।
প্রমাণস্বরুপ তাঁরা অ্যাপলের সাথে গুগলের এক চুক্তির কথা আদালতে তুলে ধরে, যেখানে অ্যাপলের নিজস্ব ব্রাউজার সাফারি’তে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগলকে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় আইফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। আর এর জন্য গুগল তাঁদেরকে ২০ বিলিয়ন ডলার প্রদান করে ২০২২ সালে। চুক্তিটি অ্যান্টিট্রাস্ট আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে দেশটির ফেডারেল আদালতকে জানায় আইন বিভাগ।
এদিকে গুগলের সাথে চুক্তির বিষয়ে নিজেদের যুক্তি উত্থাপন করতে অ্যাপল সার্ভিসেস-এর প্রধান এডি কিউ আদালতের কাছে অনুমতি চেয়েছেন। তাঁর মতে, অ্যাপল সবসময়ই তাঁদের গ্রাহকদের সেরা অভিজ্ঞতা দিতে বদ্ধপরিকর এবং এই উদ্দেশ্যে তাঁরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করে থাকে। গুগলের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তিটিও তেমন-ই।
এডি কিউ সার্চ ইঞ্জিন তৈরি না করার ৪টি কারণ দেখানোর এও জানান যে, গুগলের সাথে চুক্তি অব্যাহত রাখা না গেলে অ্যাপল পণ্যের ব্যবহারকারীদেরকে তাঁরা সেরা অভিজ্ঞতা প্রদান করতে পারবে না।