1. [email protected] : Administrator :
  2. [email protected] : mukulislam :
  3. [email protected] : newsman :
  4. [email protected] : Osman Goni : Osman Goni
  5. [email protected] : Yousuf :
লজ্জাশীলতা : পূর্ণ ঈমানের জন্যে যা অনিবার্য-১ - SHAPLA TELEVISION
June 7, 2025, 11:14 pm

লজ্জাশীলতা : পূর্ণ ঈমানের জন্যে যা অনিবার্য-১

মোঃ ইউছুপ
  • Update Time : বুধবার, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
  • 61 Time View

কথায় বলে, লজ্জা নারীর ভূষণ। লজ্জাশীলতার গুণ নারীর চরিত্রে যোগ করে এক ভিন্ন মাত্রা। এ গুণ তাকে পাইয়ে দেয় পবিত্র ও সুন্দর জীবনের স্বাদ। পবিত্র কুরআনের কাহিনী। ফেরাউনের রাজপরিষদ একবার নবী হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। সংবাদ পেয়ে তিনি বেরিয়ে পড়লেন ফেরাউনের এলাকা ছেড়ে। চলে গেলেন মাদয়ানে, আরেক নবী হজরত শুয়াইব আলাইহিস সালামের এলাকা সেটি। তিনি দেখলেন, মাদয়ানবাসীরা একটি কূপ থেকে তাদের পশুকে পানি খাওয়াচ্ছে। কূপের পাশে রাখাল-জনতার ভিড়।
আর একটু দূরে নিজেদের পশু আগলে রেখে দাঁড়িয়ে আছেন দুই নারী। হজরত মুসা আলাইহিস সালাম তাদের কাছে দূরে দাঁড়িয়ে থাকার কারণ জানতে চাইলেন। তারা জানালেন, ‘আমাদের বাবা অতিশয় বৃদ্ধ। তাই পশুগুলোকে পানি খাওয়ানোর জন্য আমাদের আসতে হয়েছে। কিন্তু রাখালেরা এখান থেকে চলে যাওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের পশুদের পানি খাওয়াতে পারি না।’ তারা দুজন ছিলেন হজরত শুয়াইব আলাইহিস সালামের কন্যা। তাদের এ কথা শুনে হজরত মুসা আলাইহিস সালাম তাদের পশুকে পানি খাইয়ে দেন। এরপর তারা চলে যায়। তিনিও সেখান থেকে চলে আসেন এক গাছের ছায়ায়…।
এরপর তাদের একজন তার কাছে আবার ফিরে আসে। কুরআনের ভাষায় ‘তখন নারীদ্বয়ের একজন লজ্জাজড়িত চরণে তার নিকট এল এবং বলল, আমার পিতা আপনাকে আমন্ত্রণ করছেন, আমাদের পশুগুলোকে পানি পান করানোর প্রতিদান দেয়ার জন্য।’ (সূরা কাসাস-২৫) এই যে রাখালদের ভিড় ছেড়ে দূরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা, আর বাবার পক্ষ থেকে অচেনা এক পুরুষের কাছে সংবাদ পৌঁছে দেয়ার সময় নিজেকে লজ্জায় আবৃত করে রাখা এগুলো চিরাচরিত সেই প্রবাদকেই মনে করিয়ে দেয়।
সৃষ্টিগতভাবেই নারীর চরিত্রে লজ্জাশীলতা একটু বেশি। এই লজ্জাশীলতা নারীর অহঙ্কার। রূপ-সৌন্দর্যে পিছিয়ে থেকেও এ গুণে নিজেকে গুণান্বিত করে কোনো নারী হয়ে উঠতে পারে সবার প্রিয়, চোখের মণি। আর চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য নিয়েও যদি কেউ এ থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে সে হয়ে পড়ে ধিকৃত, নিন্দার পাত্র।
প্রচলিত প্রবাদে এ লজ্জাশীলতা যদিও নারীর অলঙ্কার, কিন্তু বাস্তবিক অর্থে তা নারী-পুরুষ সবার জন্যই অপরিহার্য। লজ্জা একটি মানবিক গুণ। এর পরিচয় হিসেবে বলা যায়, ভালো-মন্দ যেকোনো কাজ করার, যেকোনো পথ বেছে নেয়ার সুযোগ ও সক্ষমতা প্রতিটি মানুষেরই আছে। এ সুযোগ ও সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে যারা ভালো পথ বেছে নেয়, ভালো কাজ করে, তারা দুনিয়াতেই পুরস্কৃত হয়, অভিনন্দিত হয় কিংবা প্রশংসিত হয়। আর যারা মন্দ পথ ও মন্দ কাজ বেছে নেয়, তারা লাঞ্ছিত হয়, শাস্তি পায়, অন্তত নিন্দিত ও ধিকৃত তো হয়ই।
উপরন্তু ভালো-মন্দ সব কিছুতেই রয়েছে পরকালীন প্রতিদান বেহেশত কিংবা দোজখ। প্রাথমিক সুযোগ ও সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে কেউ যখন কোনো মন্দ পথে পা বাড়ায়, সেটি হতে পারে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে মন্দ, কিংবা সামাজিক বা নৈতিক যেকোনো দিক থেকে, তখন যার মাঝে যতটুকু মানবিক বোধ থাকে এবং কাজটিকে সে যতটুকু মন্দ বিবেচনা করে, সে চায় তার এ মন্দ কাজটা ততটাই গোপন থাকুক। অন্য কেউ তার এ মন্দ কাজের কথা না জানুক। কেউ যদি দেখে ফেলে কিংবা জেনে যায় তাহলে সে মনে মনে সঙ্কুুচিত হয়। এ সঙ্কোচবোধের নামই লজ্জা।
লজ্জাশীলতা যে কেবল একটি মানবিক বিষয়, এমন নয়। হাদিসের ভাষ্য অনুসারে তা ঈমানের অংশ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ঈমানের সত্তরোর্ধ কিংবা ষাটোর্ধ্ব শাখা রয়েছে। এর মাঝে সর্বোত্তম হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা, আর সর্বনিম্ন টি হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেয়া। আর লজ্জাশীলতাও ঈমানের একটি শাখা।’ (সহিহ মুসলিম-৩৫) শুধুই কি ঈমানের শাখা? এ লজ্জাশীলতাকে যে রাসূলুল্লাহ (সা.) দ্বীন ইসলামের মূল চরিত্র হিসেবেই অভিহিত করেছেন, ‘প্রতিটি দ্বীনেরই একটি চরিত্র রয়েছে। ইসলামের চরিত্র হলো লজ্জাশীলতা। (সুনানে ইবনে মাজাহ-৪১৮১)
লজ্জাশীলতা যার মাঝে যতটুকু থাকে, প্রকাশ্যে কোনো অন্যায় করতে সে ততটাই সঙ্কোচ বোধ করে। এর ফলে সহজেই সে বেঁচে যায় বহু অন্যায় কাজ থেকে। ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, এ লজ্জাশীলতার কারণে তখন বাধ্য হয়েই মন্দ কাজ আর মন্দ পথ পরিহার করে চলতে হয় সুন্দর ও ন্যায়ের পথে। প্রিয় নবীজী (সা.) এর কী অর্থপূর্ণ সরল বাণী, ‘লজ্জাশীলতা কেবলই কল্যাণ নিয়ে আসে’। (সহিহ বুখারি-৬১১৭)

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020
Theme Customized By LiveTV