
সংরক্ষিত আসনে সিলেকশন নয়, সরাসরি নির্বাচন করে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে চান নারী এমপি প্রার্থীরা। সিলেকশনের কারণে তারা তেমন জোরালো ভূমিকা রাখতে পারেন না। তবে বিশ্লেষকদের মতে, সংরক্ষিত সংসদ সদস্য হয়েও যথেষ্ট ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। বিষয়টা গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়ে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা বলছেন, যারা দলে ত্যাগী, সমাজ ও রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদেরকেই মনোনয়ন দেয়া হবে।
জাতীয় সংসদের ৩৫০টি আসনের মধ্যে ৫০টি নারী এমপিদের জন্য সংরক্ষিত। আর এ সংরক্ষিত আসনে এমপি হতে দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছেন নারী প্রার্থীরা। গণভবন আর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সকাল-সন্ধ্যা আনাগোনা সম্ভাব্য প্রার্থীদের।
তফসিল ঘোষণার পরই শুরু হবে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি; তারপর দলীয় সিদ্ধান্তে ৪৮টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করবে আওয়ামী লীগ। এমপি হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের দাবি, সংরক্ষিত আসনে সিলেকশন নয়, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা হোক।
সম্ভাব্য প্রার্থীরা বলছেন, বিগত সময়ে যারা সংসদ সদস্য হয়েছেন তারা সংসদে গিয়েছেন কথা বলতে পারেননি তাদের অভিজ্ঞতার কারণে। তারা কখনো রাজপথে নামেননি, আন্দোলন করেননি। সরাসরি সিলেকশনে তারা সংসদে গেছেন। ফলে সংসদের চরিত্র তারা নষ্ট করেছেন বলেও অভিযোগ প্রার্থীদের।
এজন্য রাজনীতিতে ৩০-৪০ বছরের অভিজ্ঞতা যাদের আছে, নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা যাদের আছে, তাদের সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানান নারী প্রার্থীরা। এজন্য সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে আসতে চান তারা। এতে দেশের গণতন্ত্র আরও ভালো হবে বলে মনে করেন তারা
কোনো কোনো নারী নেত্রী অবশ্য এ সংরক্ষিত আসনের বিরুদ্ধে। তাদের মতে, এখানে মূল সংসদ সদস্যদের মতো ক্ষমতা দেয়া হয় না। ফলে চাইলেই অনেক কিছু করা যায় না। তাই এ নারী কোটা রাখার কোন উপযোগিতা দেখছেন না। এটি বাতিলের দাবি তাদের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদের মতে, সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের দাবি অবান্তর। তিনি বলেন, ধরে নিলাম তারা সরাসরি ভোটে নির্বাচত হলো। কিন্তু তারা যে দল থেকে নির্বাচিত হয়েছে তারা তো দলের বাইরে যেতে পারবে না। এর ফলে সংসদে তাদের কথা বলা বা অধিকারের যে বিষয়গুলো আছে সেখানে সমস্যা হবে, এটা ভাবার কারণ নেই।
আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা বলছেন, দুঃসময়ে যারা দলে ত্যাগী, সমাজ ও রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদেরকেই মনোনয়ন দেবে দল।
মূলধারার রাজনীতির বাইরে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি ও নারী অধিকার কর্মীদেরও মূল্যায়ন করা হবে, বলছেন নীতিনির্ধারকরা।
Post Views: ৮৪