1. [email protected] : Administrator :
  2. [email protected] : mukulislam :
  3. [email protected] : newsman :
  4. [email protected] : Osman Goni : Osman Goni
  5. [email protected] : Yousuf :
সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ, স্টেশনে স্টেশনে ভোগান্তি - SHAPLA TELEVISION
June 7, 2025, 11:02 pm

সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ, স্টেশনে স্টেশনে ভোগান্তি

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, জানুয়ারি ২৮, ২০২৫
  • 58 Time View

রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারাদেশে বন্ধ হয়ে গেছে ট্রেন চলাচল। মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স (ভাতা) যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা থেকে কর্মবিরতিতে গেছেন তারা। এর আগ পর্যন্ত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে গেছে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে, রাত ১২টার আগ পর্যন্ত কোনো মীমাংসা না হওয়ায় স্টাফদের এ কর্মবিরতি নিয়ে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি রেলওয়ে। ফলে, বহু যাত্রীই অবগত হতে পারেননি ট্রেন চলাচল বন্ধের ব্যাপারে। এতে সাতসকালে স্টেশনে গিয়ে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর কমলাপুরসহ সারাদেশের রেলস্টেশনগুলোতে দেখা মিলেছে অপেক্ষমান যাত্রীদের ভোগান্তির চিত্র। অনেকে ফিরে গেলেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেছে প্রায় সবাইকে। হট্টগোলও বেঁধেছে কিছু স্টেশনে। এমনকি ক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটিয়েছেন কোনো কোনো স্টেশনের যাত্রীরা। রাজশাহী রেলস্টেশনে ভাঙচুরের ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।

কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিনে গিয়ে বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোরের আলো ফোটার আগেই স্টেশনে অপেক্ষা করছেন তাদের অনেকে। স্টেশনে আসা কেউই জানতেন না ট্রেন চলাচল বন্ধ। তাই কাউন্টারে এসেই পড়তে হয় বিপাকে। শীতের মধ্যে পরিবার নিয়ে আসা যাত্রীদের ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে।

চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যোগাযোগ করা হলে ম্যানেজার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, রার্নিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে সকাল থেকে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি এবং কোনো ট্রেন আসেনি। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে সকাল ৬টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টলা, ৭টায় কক্সবাজারগামী স্পেশাল, সাড়ে ৭টায় সুবর্ণ এক্সপ্রেস, ৭টা ৪০ মিনিটে সাগরিয়া এক্সপ্রেস ও ৭টা ৫০ মিনিটে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। রার্নিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে এসব ট্রেন গন্তব্যে ছেড়ে যায়নি।

এ ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, রার্নিং স্টাফরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এ কারণে সকাল থেকে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন গন্তব্যে ছেড়ে যায়নি। কর্মবিরতি পালনকারীদের সঙ্গে এখনও আলাপ-আলোচনা চলছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মো. মজিবুর রহমান বলেন, আমরা রার্নিং স্টাফরা রাত ১২টা থেকে কর্মবিরতি পালন করছি। এ কারণে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমাদের সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের রাজশাহী বিভাগীয় আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্মকর্তা বা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার আর কোনো সুযোগ নেই। আমাদের দাবি মেনে নিলেই শুধুমাত্র আমরা কাজে যোগ দেবো। এ ছাড়া আমাদের এখন আর কিছু করণীয় নেই।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, দাবি আদায়ে এর আগেও আমরা কর্মবিরতিতে গিয়েছিলাম। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আমরা কর্মবিরতি স্থগিত রেখেছিলাম। এরপরও আমাদের দাবি আদায় না হওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে সারাদেশের মতো ময়মনসিংহ সোমবার রাত ১২টা এক মিনিট থেকে আমরা ট্রেন চালানো বন্ধ রেখেছি। আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাজে যোগ দেবো না।

নিয়ম অনুযায়ী একজন রানিং স্টাফ (চালক, সহকারী চালক, গার্ড, টিকিট চেকার) ট্রেনে দায়িত্ব পালন শেষে তার নিয়োগপ্রাপ্ত এলাকায় হলে ১২ ঘণ্টা এবং এলাকার বাইরে হলে আট ঘণ্টা বিশ্রামের সুযোগ পান। রেলওয়ের স্বার্থে কোনো রানিং স্টাফকে তার বিশ্রামের সময় কাজে যুক্ত করলে বাড়তি ভাতা-সুবিধা দেওয়া হয়; যা রেলওয়েতে ‘মাইলেজ’ সুবিধা হিসেবে পরিচিত।

২০২১ সালের ৩ নভেম্বর মাইলেজ সুবিধা সীমিত করতে রেল মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই চিঠিতে আনলিমিটেড মাইলেজ সুবিধা বাদ দিয়ে তা সর্বোচ্চ ৩০ কর্মদিবসের সমপরিমাণ করার কথা জানানো হয়। এ ছাড়া বেসামরিক কর্মচারী হিসেবে রানিং স্টাফদের পেনশন ও আনুতোষিক ভাতায় মূল বেতনের সঙ্গে পাওয়া কোনো ভাতা যোগ করার বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়। এরপরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন রানিং স্টাফরা।

মাইলেজ সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে তিন বছরের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন তারা। কয়েক দফায় অতিরিক্ত কাজ থেকে বিরত থাকাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে, বিভিন্ন সময়ে তৎকালীন রেলওয়ের মহাপরিচালক, রেলসচিব, রেলমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসেন।

গত ২২ জানুয়ারি দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের বটতলী পুরাতন রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মজিবুর রহমান বলেন, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা ১৬০ বছর ধরে অবসরের পর মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পেয়ে আসছেন। রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক যেকোনও দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে ট্রেন সচল রাখেন রানিং স্টাফরা। তাদের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি বা জাতীয় দিবসের বন্ধ নেই। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিজেদের দুর্নীতি ও অর্থ অপচয় ঢাকতে অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর রেলওয়ের রানিং স্টাফদের বেতন, পেনশন ও আনুতোষিক কমিয়ে দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বর্তমান সরকারকে তিনবার সময় দেওয়া হয়েছে। তারা স্থায়ী সমাধান চান। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পত্র এবং নতুন নিয়োগ পাওয়া রানিং স্টাফদের বৈষম্যমূলক শর্ত প্রত্যাহার করতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020
Theme Customized By LiveTV