বার্তা বিভাগ :
দেশে করোনা সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। মৃত্যুর লাইন হচ্ছে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর। অপরদিকে মানুষের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা। তাই মানুষের জীবন রক্ষার্থে সরকার এবার ১ বৈশাখ অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের ‘কঠোর’ লকডাউন দিয়েছে।
এই ৭ দিন সারাদেশে জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ঘোষণার পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী একথা জানান।
৯ এপ্রিল শুক্রবার সকালে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। সঙ্গে বাড়ছে জনগণের অবহেলা ও উদাসিনতা। এমতাবস্থায় সরকার জনস্বার্থে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।
এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ১৪ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন। এই সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া সব অফিস, গার্মেন্টস, কলকারখানা, সব ধরণের যানবাহন বন্ধ থাকবে।
কঠোর লকডাউনের বিষয়ে ব্যাখা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, কঠোর লকডাউনের সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া, সব ধরণের অফিস-আদালত, গণপরিবহন, কলকারখানা, গার্মেন্টস, দোকানপাট, মার্কেট, শপিংমল সবকিছুই বন্ধ থাকবে। সবকিছু কঠোর লকডাউনের আওতাধীন থাকবে। মানুষ যে যেখানে আছেন, সেখনেই থাকবেন। এটা কঠোর লকডাউন হবে। মানুষকে ঘরে থাকতে হবে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে আসতে পারবে না, এটা নিশ্চিত করা হবে।
এই দফায় ৭ দিনের লকডাউন দেয়া হলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বগতির কারণে গত ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রবিবার রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে শপিংমল, দোকানপাট, হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।
এরপর ৭ এপ্রিল বুধবার থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন সেবা চালু রাখার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেয়ার দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, করোনায় প্রথম ধাপের ‘লকডাউনে’ অর্থনৈতিকভাবে মার্কেট ও শপিংমলের ব্যবসায়ীদের মেরুদন্ড ভেঙে পড়েছে। তখন ক্ষতি হয়েছে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৭৪ কোটি টাকা।
এ অবস্থায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশের সবকিছু খোলা থাকলেও মার্কেট ও শপিংমল কেন বন্ধ রাখা হয়েছে-এমন প্রশ্ন ব্যবসায়ী নেতাদের।
তাঁদের মতে, দুই ঈদ ও বৈশাখকে সামনে রেখে ব্যবসা বন্ধ রাখলে পথে বসার উপক্রম হবে লাখ লাখ ব্যবসায়ী ও তাদের কর্মচারীদের।
তাই সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার অনুমতি চেয়ে ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মুখে ৯ এপ্রিল শুক্রবার থেকে ১৩ এপ্রিল দোকানপাট খোলার অনুমতি দেয় সরকার।