1. [email protected] : Administrator :
  2. [email protected] : mukulislam :
  3. [email protected] : newsman :
  4. [email protected] : Osman Goni : Osman Goni
  5. [email protected] : Yousuf :
কিশোরের যে গ্রাফিতিতেই পতন বাশারের - SHAPLA TELEVISION
June 8, 2025, 4:24 pm

কিশোরের যে গ্রাফিতিতেই পতন বাশারের

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ডিসেম্বর ৯, ২০২৪
  • 61 Time View

১৩ বছর আগে ২০১১ সালের কোনো এক সময় সিরিয়ার দক্ষিণে দারার একটি সড়কে মাত্র ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রাফিতি এঁকেছিল। মূলত সেই গ্রাফিতিই বদলে দিল সিরিয়ার ভাগ্য। অবসান হলো আসাদ যুগের।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি’র একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এই খবর জানা গেছে।
কিশোর মুয়াবিয়া সায়সানেহ দারার ওই সড়কে স্প্রে করে লিখেছিল, ‘এজাক এল দরজা,ইয়া ডাক্তার’। এর অর্থ হচ্ছে, ‘এবার আপনার পালা ডাক্তার।’
গ্রাফিতিতে ডাক্তার বলা হয়েছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে।
উল্লেখ্য, দামেস্কের ইউনিভার্সিটি থেকে চক্ষুবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন বাশার। তার ইচ্ছে ছিল চিকিৎসক হওয়ার। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চক্ষুবিজ্ঞানের ওপর উচ্চতর ডিগ্রিও অর্জন করেছেন তিনি। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর বাবার নির্দেশে দেশে ফিরেন তিনি।
পরে সিরিয়ায় সামরিক বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন বাশার।
বাশার আল আসাদকে উদ্দেশ করে লেখা মুয়াবিয়ার ওই জাতীয় বিদ্রোহের স্মারক হয়ে ওঠে। এর ফলে শুরু হয় ২১ শতকের সবচেয়ে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের।
আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে মুয়াবিয়ার এই কাজটি দ্রুত এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এই গ্রাফিতির কারণেই স্থানীয় পুলিশের হয়রানির শিকার হয় মুয়াবিয়া ও তার বন্ধুরা।
গোপন পুলিশ তাদের ২৬ দিন আটকে রাখে। অত্যাচার ও মারধর করে যা শেষ পর্যন্ত দারার বাসিন্দাদের বিক্ষুদ্ধ করে তোলে। তার মুক্তির দাবিতে বাবা-মা, প্রতিবেশি এবং আন্দোলনকারীরা প্রতিবাদ করতে গিয়ে টিয়ার গ্যাস ও গুলির মুখোমুখি হতে হয়।
মুয়াবিয়াকে মারধরের ছবি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যে শুধু দারাতে নয়, সিরিয়া জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ২০১১ সালের ১৫ মার্চ সিরিয়ায় প্রথমবারের মতো ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু হয়।
পরবর্তীতে এই আন্দোলন স্বাধীনতা ও আসাদ শাসনের অবসানের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভে পরিণত হয়। শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভকে সহিংসতায় পরিণত করে তোলে আসাদ বাহিনী। নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে।
ভিন্নমতাবলম্বীদের বন্দি করে আর অগণিত সিরিয়ানকে নির্যাতন শুরু করে।
‘আরব বসন্ত’ থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া এই আন্দোলন দ্রুতই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয়। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীরা হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য হয়।
২০১১ সালের জুলাইতে আর্বিভূত হয় ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’ (এফএসএ)। আসাদ বাহিনী থেকে পদত্যাগ করে সৈন্যদের নিয়ে গঠিত এই সংগঠন সংহতি ও সম্পদের অভাবে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট হিসেবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়। সেই মুহূর্তে বিশৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে পুঁজি করে বেড়ে ওঠে ‘জাভাত আল-নুসরা’ এবং পরে ইসলামিক স্টেটের মতো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো।
সেই ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় সিরিয়া। প্রাণ হারিয়েছে ৫ লাখেরও বেশি মানুষ এবং আহত হয়েছে ১৩ মিলিয়নেরও বেশি বাসিন্দা।
তবে সিরিয়ায় দীর্ঘ ১৫ বছরের গৃহযুদ্ধ সামাল দিতে পারলেও এবার মাত্র ১২ দিনে পতন ঘটে বাশার আল আসাদের ২৪ বছরের শাসনামলের।
গত ২৭ নভেম্বর আলেপ্পোতে প্রবেশের পর অপ্রতিরোধ্য গতিতে সিরিয়ার একের পর এক শহর দখল করতে থাকে সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে পুরো দামেস্ক ঘিরে ফেলে বিদ্রোহীরা।
এর মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে বিমানযোগ অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যান। আর এর মধ্যদিয়ে সিরিয়ায় অবসান ঘটে ৫৪ বছরের আসাদ পরিবারের রাজত্বের।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020
Theme Customized By LiveTV