1. [email protected] : Administrator :
  2. [email protected] : mukulislam :
  3. [email protected] : newsman :
  4. [email protected] : Osman Goni : Osman Goni
  5. [email protected] : Yousuf :
ই-পাসপোর্টের যুগেও এমআরপি - SHAPLA TELEVISION
June 9, 2025, 4:57 am

ই-পাসপোর্টের যুগেও এমআরপি

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
  • 65 Time View

পুরো বিশ্বেই এখন ই-পাসপোর্টের কারবার; অথচ বাংলাদেশ ২০২৫ সাল পর্যন্ত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (যন্ত্রপাঠ্য পাসপোর্ট বা এমআরপি) সেবা বহাল রাখতে চাইছে। ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা নিতে চাচ্ছে না বাংলাদেশ। এমআরপি যথেষ্ট ব্যয়বহুল সেবাও বটে।
প্রবাসে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এমআরপি সেবা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদিও ১১৯তম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ২০২০ সালেই ই-পাসপোর্ট যুগে ঢুকেছে। সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, লেবানন প্রভৃতি দেশে নানা পেশায় নিয়োজিত প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশি এ বছরের মাঝামাঝি পাসপোর্ট-জটিলতায় পড়ে। জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টে তথ্যের বিভিন্নতা থাকায় ই-পাসপোর্ট করতে পারছে না তারা। পাসপোর্ট মূল দালিলিক প্রমাণ হিসেবে গ্রাহ্য হওয়ায় বিদেশে বৈধভাবে থাকার সুযোগও হারাচ্ছে তারা। এমআরপি থাকলে ই-পাসপোর্ট করার সুযোগও পাবে প্রবাসী শ্রমিকরা। ওয়ার্ক পারমিট-সংক্রান্ত জটিলতায় পড়তে হবে না তাদের।
পাসপোর্ট সংকটের নিরসনের জন্য ১৫ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী তিন সপ্তাহের মধ্যে বিদেশের যেসব মিশনে পাসপোর্ট-জটিলতা চলছে সেসব জায়গায় ১ লাখ ৯০ হাজার এমআরপি জরুরিভাবে তৈরি করে ফেডেক্সের মাধ্যমে পৌঁছানোর কাজ করছে সরকার। প্রতিদিন গড়ে আট হাজার এমআরপি যাচ্ছে বিদেশে। ডিসেম্বরেই সবার পাসপোর্ট পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে পাসপোর্ট সংকট কেন জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (কনস্যুলার ও কল্যাণ) শাহ মুহাম্মদ তানভীর মনসুর বলেন, ‘মিশনগুলোতে এমআরপি কমানোর নির্দেশনা দেওয়া ছিল। আর ই-পাসপোর্ট করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, সবাইকে ই-পাসপোর্ট করতে হবে। কিন্তু তথ্যগত জটিলতায় অনেকেই ই-পাসপোর্ট করতে পারেনি। সংকট প্রকট হওয়ায় গত ১০ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এমআরপি ছাপিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।’
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন মন্ত্রণালয়, পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও অংশীজনদের নিয়ে গত ৩ ও ১০ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে মালয়েশিয়া, কাতার ও সৌদি আরবের কয়েকটি মিশনে পাসপোর্ট-জটিলতার কথা বলা হয়েছে। সেসব মিশন জানিয়েছে, পাসপোর্ট-জটিলতায় শ্রমিকদের ফেরাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
গোয়েন্দা ও মিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট তিন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের উপস্থিতিতে এমআরপি সেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। বয়স সংশোধনের ক্ষেত্রে জন্মসনদের ভিত্তিতে পাঁচ নয় বরং আট বছর পর্যন্ত পার্থক্য থাকতে পারবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়। বয়স সংশোধন করার ফলে অনেক শ্রমিক আরও কিছুদিন বৈধভাবে বিদেশে কাজ করতে পারবে। এতে শ্রমিকদের ওয়ার্ক পারমিট পেতেও সুবিধা হবে। জরুরি ভিত্তিতে তিন লাখ এআরপি কেনারও সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে।
ডিসেম্বরে মিশনগুলোর হিসাবমতে, মালয়েশিয়ায় ৪৬ হাজারের বেশি বাংলাদেশি এমআরপি নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ২৮ হাজার কর্মীর পাসপোর্ট ছাপার অপেক্ষায় রয়েছে। ১৪ হাজারের বেশি পাসপোর্ট এখনো প্রক্রিয়াধীন। সৌদি আরবে এক লাখের বেশি কর্মীর আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৮৫ হাজারের বেশি কর্মীর পাসপোর্ট ছাপার অপেক্ষায় আছে। কাতারে ১০ হাজার কর্মীর আবেদন জমা রয়েছে। লেবানন, সিঙ্গাপুরেও জমা আছে পাসপোর্টের আবেদন।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেহেতু এখনই এমআরপি পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না, তাই কারিগরি কমিটি গঠন করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যা সমাধানে কাজ করা যেতে পারে। তাদের পরামর্শ বিদেশের যেসব মিশনে সংকট চলছে, সেখানে এনআইডি বা অন্য কাগজপত্রের চেয়ে পুরনো এমআরপির ভিত্তিতেও ই-পাসপোর্ট দেওয়া যেতে পারে। আপাতত জন্মসনদই হবে তাদের পাসপোর্টের মূল পরিচয়পত্র।
দেশে অবস্থানরতদের ক্ষেত্রে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে তাদের জন্মসনদ ও বাকিদের এনআইডি দিয়ে ই-পাসপোর্ট করতে হয়। বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে শ্রমিকরা এআরপিকেই মূল দালিলিক প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করেন। তাদের অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, নেই পাসপোর্টের সঙ্গে সামঞ্জস্য। জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে মিল রেখে পাসপোর্ট করতে গেলে কাজ করার অনুমতি থাকবে না। বিশাল জনগোষ্ঠী কর্মহীন হয়ে পড়বে, রেমিট্যান্স আসা বন্ধ হয়ে যাবে। এসব ক্ষেত্রে জন্মসনদই ভরসা।
আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ডিজি নূরুল আনোয়ার জানান, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালে শেষ হয়ে গেছে। এর যন্ত্রপাতি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়বহুল ও জটিল। এ প্রকল্প চালু রাখা কঠিন। তিনি বিদেশি মিশনে ই-পাসপোর্ট তৈরিতে জন্মসনদ ব্যবহার করতে বলেছেন। না হলে আগের এমআরপির তথ্যের ভিত্তিতে ভুল পাসপোর্ট তৈরি হলে বিশ্বে দেশের সুনাম নষ্ট হবে। এসব বিষয়ে জানতে তাকে ফোনে, হোয়াটসঅ্যাপে কল দিলেও তিনি ধরেননি, কলব্যাকও করেননি।
মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসী ও শ্রমিকদের পাসপোর্ট নবায়ন প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র সচিব, পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে জানিয়েছে, পাসপোর্ট ছাপানোর জন্য ফয়েল পেপার আনা হচ্ছে। আশা করছি ১০ ডিসেম্বর থেকে পাসপোর্ট পৌঁছানোর কাজ শুরু হবে। শুধু মালয়েশিয়া নয়, মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে পাসপোর্টের জন্য ঝামেলা হচ্ছে। অনেকে আমাকে অনেক মেসেজ লেখেন। এখন দুই ধরনের পাসপোর্ট আছে, একটা হচ্ছে ই-পাসপোর্ট আরেকটি হচ্ছে এমআরপি। ই-পাসপোর্ট দেওয়ায় কোনো সংকট নেই। তবে আমাদের প্রবাসী শ্রমিক ভাইয়েরা ই-পাসপোর্ট করতে চান না। তারা এমআরপি পাসপোর্ট করতে চান। প্রবাসী ভাইদের ডিমান্ড হচ্ছে এমআরপি।’
২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এমআরপি সেবার অবসান ও ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু করে প্রবাসীদের সমস্যার নিরসনে একটি কমিটি করেছে সরকার। এর সভাপতি থাকবেন সুরক্ষা সেবা বিভাগের (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) অতিরিক্ত সচিব। সদস্য থাকবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের প্রতিনিধি, রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের প্রতিনিধি, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের পরিচালক, পুলিশের বিশেষ শাখার প্রতিনিধি, পাসপোর্ট ও ভিসা পরিচালক (পাসপোর্ট অধিদপ্তর), যুগ্ম সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন), সুরক্ষা সেবা বিভাগ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020
Theme Customized By LiveTV